আপীল
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন
কারো আছে জমিদারী,
কেহ বা উপাধিধারী,
বাঙ্গালা বিহারে মোরা যত কিছু ধারী,
সকলে মলিয়া এই আবেদন করি।
প্রাণের মরি সেও ভাল,
শতবার মৃত্যু ভাল,
লাঙ্গুল-বিরহ কিন্তু সহিতে না পারি।
বোম্বাই নগরে ধাম,
‘ভারত সময়’ নাম–
শ্বেতাঙ্গ পত্রিকা এক রাগিয়াছে ভারী,
মহাক্রোধে করেছে সে এ হুকুম জারি,
‘যত মূক ভদ্র পাও,
লাঙ্গুল কাটিয়া দাও।
তা হ’লে হইবে দন্ড উচিত সবারি!’
‘বোবার আরতি নাই’
এই সত্য জানি তাই
নীরব ছিলাম মোরা ল্যাজ-প্রাপ্তগণ।
একি শুনি অকস্মাৎ,
বিনা মেঘে বজ্রপাত
মৌন দোষে হবে না কি লাঙ্গুল কর্তন।
এস তবে সহচর,
স্পতমে তুলিয়া স্বর
উচ্চকন্ঠে করি আজি সবারে জ্ঞাপন,
আমরা করিনি কভু আইন লঙ্ঘন।
কোথা কোন দুরাচার
‘সিডিসন’ পরচার
করে, তার শিরে হোক এই অশনি পতন।
কোথা কে বিদ্রোহী জন,
কর এবে সন্বরণ
লেখনী, রসনা আর স্বরাজ-স্বপন,
করিও না অপব্যয় ইমূল্য জীবন।
স্বাক্ষর—
যত ভূমি-অধিকারী
যে ক’টি লাঙ্গুল-ধারী।
যার আছে জমিদারী।
যত সভ্য অনাহারী।