যে তুমি
শহীদুল ইসলাম
যে তুমি
হেঁটে আসার শব্দ শুনে বলে দিতে চিনে ফেলতে,
কে আসছে?
যে তুমি
লক্ষ মানুষের ভিড়ে কন্ঠ শুনে
বলে দিতে,
অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকতো তোমার পানে,
আর সকলে বলতো তুই কী করে বুঝলি,
এটা ওর কন্ঠস্বর?
যে আমি
তোমার পিছন থেকে চোখ চেপে ধরলে
অনিমেষে বলে দিতে,
চিনে ফেলতে আর বলতে আমাকে হারানো অসম্ভব।
সে তুমি
চিকচিকে রোদেলা দুপুরে
তুমি চিনতে পারোনি।
এ তোমার ব্যর্থতা!
সে তুমি
হয়তো ফাগুনের গান শোন না।
আমি তো ফাগুনের ডালে ডালে মুকুল হয়ে ফুটি।
কোকিল হয়ে গান করি।
দক্ষিনা পবনে ছন্দ তুলি।
আমিতো বৃষ্টি জলে ভেজা প্রতীক্ষিত সে আমি।
যে তোমার অপেক্ষাতে
দীর্ঘতম প্রহর গুনে
তীব্র হিমের প্রকোপকেও উপেক্ষা করে বসে আছি।
শুধু তোমার জন্য।
সে তুমি
চিনলেনা অনেকক্ষণ চেয়ে থেকে চলে গেলে।
এক বারের জন্যও প্রশ্ন তুললে না, কে তুমি?
তোমার কণ্ঠস্বর শুনিনা বহুদিন।
তবু বুকের তলে খুব শব্দ করে।
তোমার সেই শব্দ করা হাসি
আজও চির স্মরণীয়।
যে তুমি
হাসতে হাসতে মাতিয়ে তুলতে উঠোন, আকাশ পাড়া মহল্লা।
যে তুমি
তোমার চোখে স্বপ্নের বীজ বুনতে,
অল্পতে অশ্রু কাঁপাতে।
যে তুমি
তোমার হাতে অহর্নিশ কবিতা, গল্প,উপন্যাস লিখতে,
ছবি আঁকতে।
সে তোমার হাতে এসব কী?
চোখ জুড়ে এক হ্রাস ব্যর্থতার ছাপ!
যে তুমি
আমাকে বলতে বোকা বুদ্ধু হাসতে জানে না।
কাঁদতে জানে না।
ঠিকঠাক শব্দ উচ্চারণ করতে পারে না।
সে তুমি এতটা নীরব।
যার জন্য আমার হাজার শতাব্দীর জমানো শ্রেষ্ঠ ভালোবাসা।