পথশিশুদের_প্রতি
আনোয়ার
————————————–
ওদের পথেই ঘর,পথেই বাড়ি পথ ওদের প্রাসাদ,
জীবনটা নিছক মিথ্যা অতি নেই কোনো সুখ, আহ্লাদ।
ওরা পথে পথে ঘোরে পেটের দায়ে উসকো খুসকো চেহারা,
জোটেনা অন্ন,মন বিষন্ন অনাথ মা-বাপ হারা।
আস্তাকুঁড়ে থাকে পড়ে দেখার কেহ নাই,
আবর্জনা কুঁড়ায়,হাত পেতে থাকে জঠর জ্বালায়।
ধূলিমাখা শরীর, মলিন বদন ক্ষুধার্ত ভয়াল দশা,
ক্ষনিকের তরেও খুঁজে নাহি পায় একটু সুখের আশা।
সাহেবদের লাথি গুঁতা খেয়ে ধুকছে তারা,ক্ষুধায় কণ্ঠ ক্ষীণ,
করুণ আঁকুতি-একটেহা দ্যান না,খায়নি তিনদিন।
ওষ্ঠা খেয়ে ঝরছে রক্ত,ছাতিফাঁটা ক্রন্দন,
ওদের জন্য ওরে পাষাণ!এতটুকু কাঁদে না মন?
অপবিত্র গায়ে, আবর্জনা নিয়ে ধর্মালয়ে উঠতে মানা,
ঘুরে ঘুরে মরে, পেটের টানে ডাস্টবিন হয় শেষ ঠিকানা।
তারা বৃষ্টিতে ভেজে,অগ্নিসম রৌদ্রে দগ্ধ কায়া,
জোটেনা ত্যানা,শীতবস্ত্র, পায় না কোথাও ছায়া।
আমরা সাহেব বাড়িতে তো কুকুর, বিড়াল পুষি,
যত্নে তাদের মাংস খাওয়াই, এদের বেলা লাথি, ঘুষি!!
ওরা দুটি পয়সা দাবি করে, হাজার নাহি চায়,
যখন নির্যাতনে,মরণ,জীবন ধরে টানে তখন একটি রুটি চুরি করে খায়।
তখন তোর সুশীল সমাজ, নেয় জমের সাজ,চোর বলে করে প্রহার,
বেদম মারে,রক্ত ঝরে বুকফাটা আত্মচিৎকার।
কেউবা বলে–বেজন্মা,চোরের বাচ্চা।দাও ওরে কঠিন শাস্তি,
ছোট্ট হৃদয় যন্ত্রণায় কাতর,তবু্ও ভেঙে দেয় অস্থি।
একই রবের সৃষ্টি মোরা তবু কেন এত অসমতা?
মানুষ হয়েও মানুষের প্রতি কেন এত নিষ্ঠুরতা।
কবে ভাঙবে দ্বিধার শৃঙ্খল, গুড়িয়ে যাবে ঐ পাষণ্ডের ঝাণ্ডা?
ঢাল-তলোয়ার,ক্ষেপণাস্ত্র নয়,ভালোবাসার কাছে পরাজিত হবে নৃশংস, অত্যাচারী পাণ্ডা।
কবে আসবে সেজন,ব্যথিত হৃদে স্বপ্ন জাগাতে?
থাকবে না কেউ অনাহারে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাঁচবে শান্তিতে ।