চোখের বালি
– পারমিতা মণ্ডল
আমার আর নেই কোনো অধিকারের জোর,
আমি আজ কারো উৎপাতের ছায়া নই
আমি আজ মুক্ত
নেই কোনো অভিসন্ধির ঘোর।
আমি বরঞ্চ খুব খুশিই বলতে পারো,
নিঃসন্দেহে অমাবস্যার চোর।
আমি যেন মৃত্যুর খুব কাছেই দাঁড়িয়ে,
যেন আটকে গেছি চোরাবালিতে।
নতুন করে জীবন ফিরে পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা আমার চোখের সামনে ভাসছে না।
সেদিন দেখলাম কয়েকটা চিল উড়ে যাচ্ছে,
আমি তখন পথভোলা অন্ধ হাওয়ায় উদাস দাওয়ায় বসে।
ওরা কি আমার দিকে তাকালো একবার?
উহু,
তা কেন হবে?
ওরা তো দিগন্তের সাথে পাল্লা দিতে ব্যস্ত,
আমার মতো শোকার্ত শ্মশানের দিকে তাকানোর কি আর সময় আছে ওদের!
আমিও না।
অন্ধ হাওয়ায় বসে বসে নিজেও অন্ধত্ব গ্রহণের অভিপ্রায়।
ওরা আমায় কেন দেখবে?
ওরা তো যে যার জুড়ি নিয়ে আকাশের নীল ছুঁয়ে উড়ে গেল।
তবে আমি ভাবছি অন্য কথা!
আচ্ছা প্রশ্ন,
তুমি তো সবার কাছে উত্তর চাও, তাই না?
আজ আমি ভিক্ষুক বেশে তোমার কাছে উত্তরপ্রার্থিনী হয়ে এসেছি।
তুমি কি জানো?
আমার মোমের আলোয় জ্বালা পৃথিবীর ওপাশ টাতে কি কেউ ছিল যাকে আমি দেখতে পাই নি?
বলো না?
কিন্তু কেই বা থাকবে।
সেখানে তো অন্ধকারের ঘনঘটা,
একফোঁটা আলো যাবার জো নেই।
কিন্তু হাতের কাছের বিষবৃক্ষ নামক বইখানা কেই বা কেড়ে নিল!
আমি তো খুঁজে পাই নে।
তবে কি ওসব, সব স্বপ্ন ছিল?
আমি কি তবে স্বপ্নে দেখলাম?
ঐ যে দূরে কে যেন!
আবছায়ায় ঢাকা।
ঐ তো লাল নীল আলোর ঝলক।
এই,
এই তো কাছে আসলো।
কই? না তো।
কেউ তো নেই।
তুমি দেখতে পেয়েছ প্রশ্ন?
পাওনি?
কিন্তু আমি তো স্পষ্টতই দেখলাম।
ওধারেই তো সে ছিল।
যেই আমি ছুতে গেলাম অমনি কোথায় চলে গেল!
আমায় তো সে ধরা দেয় না।
তবে,
কি যেন একটা নাম কালের ধ্বনিতে ভেসে আসছে,
তুমি শুনতে পাচ্ছ তে প্রশ্ন?
বি-বি-বি-দ-দু-র-রু-প
হ্যাঁ,
এবার স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি।
বিদ্রুপ-ই তো।
তবে কি বিদ্রুপ করে সে আমায় দিল গালি?
এতক্ষণে বুঝলাম,
আমি হয়তো তার চোখের বালি।