তিমির আত্মহত্যা
আল শাহারিয়া
আমরা সাগরতীরে বসে দেড়শো তিমির আত্মহত্যা দেখলাম অপলক
বালুচর ভিজিয়ে অতঃপর উঠে দাঁড়ালাম। আগামীকাল আবার আসবো
সংখ্যা বাড়বে‚ আমরা জেনে গিয়েছি কষ্টেরা সংক্রামক।
আমরা দুঃস্বপ্নের মতো ভয়ংকর সময়ে পতিত
কোনো সুখের বার্তাবাহক আমাদের ঠিকানায় আসে না বহুকাল হয়।
প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম উভয় মহামারিতে পৃথিবী হাসছে‚ পৃথিবী কাঁদছে।
জনসংখ্যা হ্রাসের এই দুঃখ-স্রোতে ভেসে গিয়েছে কত নিষ্পাপ খুনি‚
ঝরে যাচ্ছে কত নির্মল ফুল-পাতা।
পৃথিবীর এই দুঃখ-সুখে ঘরবন্দী নির্বাসিত কবি
প্রেয়সীর চোখে আকাশ এঁকে দিচ্ছে উড়াল।
খাবারের খোঁজে ক্ষুদ্রতাকে ক্ষুদ্র জ্ঞান করেই ছুটছে কতশত প্রাণ‚
থমকে গিয়েছে সমস্ত বিশ্ব‚ থামেনি কেবল অর্থহীন নির্বাচন‚ মিছিল‚ মিটিং‚ গণসমাবেশ আর চায়ের দোকানের সাময়িক রাষ্ট্র উন্নয়নের রাজনীতি।
রোজ রোদ মাখা নির্মাণ শ্রমিক অপছন্দ করতো রোদের গন্ধ;
অথচ‚ সেই গন্ধের প্রতি আজ কী তীব্র নেশা তাঁর!
মলিন পৃথিবীর এই আম্লান দুঃখ-সাগরে ভেসে যাচ্ছি প্রতিক্ষণ
আমাদের বংশাবতংসেরা দুঃখের ভারে অন্য আলোয় হাঁটছে পথ
সে খবর পাচ্ছি রোজ মুঠোফোনের পত্রিকায়‚
চারকোণা বর্ণময় বাক্সে চোখ রেখে।
তাঁদের যাত্রায় কেউ খুশি হচ্ছি কেউ আবার দুঃখে ভেঙে ঝরঝরে মাটি হয়ে যাচ্ছি।
দুঃখ-জরায় পূর্ণ পৃথিবীর একটুকরো স্থান কিনে নিয়ে নির্বাসিত কবি প্রেয়সীর চোখে চেয়ে আরেকবার জন্মানোর স্বপ্ন বুনছে।
তাঁর অনুভূতির তর্জমা অনেকটা এমন—
আমাদের জাতিস্মর প্রেমে পূর্ণতা আসবে মহাবিশ্বের মৃত্যুর পর।
মহাবিশ্বের মৃত্যুর পর তুমি-আমি আরেকবার জন্ম নেব‚
অন্যকোথাও অন্যকোনো ভাষায় ‘ভালোবাসি’ বলবো তোমায়।